মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ - ০৭:৩০
শিশুকে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দিন

জীবনের প্রারম্ভিক পর্যায়ে শিশু কৌতূহল ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই শেখে। তাই অভিভাবকদের উচিত নয় এই স্বাভাবিক শেখার প্রক্রিয়ায় অযথা হস্তক্ষেপ করা বা বাধা সৃষ্টি করা।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: যেমন একটি ছোট পাখি নির্ভয়ে উড়ে উড়ে আকাশকে পরীক্ষা করে, তেমনি একটি শিশু তার চারপাশের জগতকে কৌতূহলের মাধ্যমে অনুভব ও স্পর্শ করে। জীবনের প্রথম দিকের বছরগুলোতে শিশুর ভালো-মন্দ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকে না; তবে তার কৌতূহল অত্যন্ত প্রবল। সে যা কিছু হাতে পায়, তা মনোযোগ দিয়ে দেখে, স্পর্শ করে, কখনো মুখে দেয়, কখনো মাটিতে আছাড় মারে এবং নানা উপায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। এর মাধ্যমে সে জানতে চায়—যে বস্তু বা বিষয়টি সে পর্যবেক্ষণ করছে, তা তার কার্যকলাপের প্রতিক্রিয়ায় কীভাবে সাড়া দেয়।

এই কারণেই অভিভাবকদের উচিত নয় অপ্রয়োজনীয় আদেশ-নিষেধ, কঠোরতা কিংবা অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ও জ্ঞানার্জনের পথ রুদ্ধ করা।

এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টির প্রতি নিষ্পাপ ইমামগণ (আ.) তাঁদের কর্মজীবনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে উম্মে খালিদ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি আমার বাবার সঙ্গে একবার রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হয়েছিলাম। সে সময় আমি খেলতে খেলতে নবীজির (সা.) আঙটির সঙ্গে খেলায় মগ্ন হয়ে পড়ি। আমার বাবা কঠোরভাবে আমাকে এতে বাধা দেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, “ওকে ছেড়ে দাও, তাকে খেলতে দাও।”

এই ঘটনায় শিশুটিকে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দিলে তার বা অন্য কারও কোনো ক্ষতির আশঙ্কা ছিল না। কিন্তু পিতার ধারণা ছিল—এই আচরণ শিশুর শিষ্টাচার এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মর্যাদার পরিপন্থী। সে কারণেই তিনি তাকে বাধা দিয়েছিলেন। তবে রাসূলুল্লাহ (সা.) বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখেন এবং শিশুটিকে মুক্তভাবে খেলতে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন—শিশু যেন এই ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বস্তু ও পরিবেশ সম্পর্কে পরিচিত হতে পারে, নতুন কাজে হাত দেওয়ার সাহস অর্জন করে, তার সৃজনশীলতা বিকশিত হয় এবং ধীরে ধীরে উপলব্ধি করতে শেখে কোন কাজটি ভালো আর কোনটি মন্দ।

সূত্র: সিরায়ে তারবিয়াতে পায়াম্বার ও আহলে বাইত, পৃষ্ঠা ১২৯–১৩১।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha